ছুটি মানেই পরিবার, বন্ধু বা প্রিয়জনের সাথে কিছু আনন্দঘন সময় কাটানোর সুযোগ। যদি আপনি ভাবছেন কোথাও ঘুরতে যাবেন, তাহলে এই ঈদে ঘুরে আসুন বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান, যেগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস আর আবহাওয়া নিঃসন্দেহে আপনাকে মুগ্ধ করবে।
বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান – বিস্তারিত তথ্য
এই প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে বাংলাদেশের এমন ১০টি জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য নিয়ে যেগুলো ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের জন্য আদর্শ এবং সর্বাধিক খোঁজ করা স্পট হিসেবেও গুগলে জনপ্রিয়। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস এবং সংস্কৃতিতে ভরপুর একটি দেশ। দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে আছে এমন কিছু দর্শনীয় স্থান, যা পর্যটকদের হৃদয় জয় করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ২০২৫ সালে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি ভ্রমণ গন্তব্য এবং সেগুলোর বিস্তারিত তথ্য।
🌊 ১. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত – বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত বিস্তীর্ণ ও শান্ত। নীল জলরাশি ও সূর্যাস্ত মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে। আশেপাশে সবুজ পাহাড় ও খাঁজকাটা বালির সৈকত প্রকৃতিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
অবস্থান:
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত অবস্থিত কক্সবাজার পৌর এলাকায়, এটি কক্সবাজার সদর উপজেলায়, কক্সবাজার জেলায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগে অন্তর্ভুক্ত। এখান থেকে দক্ষিণে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ, যা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অংশ। এটি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা পর্যটকদের অন্যতম পছন্দ।
যা দেখতে পাবেন:
- বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত
- ইনানী, হিমছড়ি, লাবণী বিচ
- মেরিন ড্রাইভ রোড ও রিসোর্ট
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা বিমানযোগে কক্সবাজার
কোথায় থাকবেন:
- সায়মন বিচ রিসোর্ট
- হোটেল সি গাল
- হোটেল দ্যা কক্স টুডে
হোটেল ভাড়া:
- সাধারণ হোটেলে রাতপ্রতি ১২০০–২০০০ টাকা,
- মিড রেঞ্জ হোটেলে ২৫০০–৪৫০০ টাকা,
- বিলাসবহুল রিসোর্টে ৫০০০–১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া হয়ে থাকে।
সতর্কতা বার্তা:
জোয়ার-ভাটার সময় সতর্ক থাকুন, গভীর পানিতে না নামাই ভালো। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাইফগার্ডদের নির্দেশনা মেনে চলুন। রাতের বেলায় একা বিচে যাওয়া এড়িয়ে চলুন।
🌴 ২. সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ –
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হওয়ায় এখানকার পানি স্বচ্ছ ও নীলাভ। নারকেল গাছ, সাদা বালির সৈকত আর প্রবাল পাথরের মিশেলে গঠিত এক অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য। রাতের বায়োলুমিনেসেন্ট আলো অভূতপূর্ব।
অবস্থান:
সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ এবং বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণে অবস্থিত।
যা দেখতে পাবেন:
- প্রবাল দ্বীপ, নীল জলরাশি
- স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং
- বায়োলুমিনেসেন্ট বিচ (রাতে)
কিভাবে যাবেন:
১. কক্সবাজার থেকে টেকনাফ
২. টেকনাফ জেটি থেকে ট্রলার/জাহাজে সেন্ট মার্টিন
কোথায় থাকবেন:
- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট
- ব্লু মেরিন রিসোর্ট
হোটেল ভাড়া:
- সাধারণ কটেজে ভাড়া ৮০০–১৫০০ টাকা,
- মাঝারি মানের হোটেলে ২০০০–৩০০০ টাকা,
- সি ভিউ রিসোর্টগুলোতে ৩৫০০–৬০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া হয়ে থাকে।
সতর্কতা বার্তা:
সমুদ্রপথে যাত্রার সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নিন। প্রবাল ভাঙা বা সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ—প্রকৃতিকে সুরক্ষা দিন। পানির বোতল ও প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না।
🌿 ৩. সুন্দরবন
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যার জলপথে ঘন সবুজ গাছপালা আর নদীর শাখা-উপশাখা বিস্তৃত। বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ ও কুমির দেখা যায়। পরিবেশ এখানে নির্জন ও রহস্যময়।
অবস্থান:
সুন্দরবন বিস্তৃত খুলনা বিভাগের তিনটি জেলায়, খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা, বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলা এবং সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য।
যা দেখতে পাবেন:
- রয়েল বেঙ্গল টাইগার
- হিরণ পয়েন্ট, কটকা, দুবলার চর
- বনভোজন ও নৌকা ভ্রমণ
কিভাবে যাবেন:
খুলনা বা মোংলা থেকে বোটে সুন্দরবনে প্রবেশ
কোথায় থাকবেন:
- খুলনায় হোটেল টাইগার গার্ডেন
- সরকারি বন বিভাগের রেস্ট হাউজ
হোটেল ভাড়া:
- খুলনায় থাকার খরচ ১০০০–২০০০ টাকা সাধারণ হোটেলে,
- ২৫০০–৪০০০ টাকা মানসম্মত হোটেলে।
- বনবিভাগের রেস্টহাউজ ২০০০–৫০০০ টাকা পর্যন্ত রিজার্ভ করতে হয়, যার সাথে নৌকা/ট্যুর প্যাকেজ আলাদা।
সতর্কতা বার্তা:
বন্যপ্রাণীর এলাকা হওয়ায় গাইড ছাড়া প্রবেশ করবেন না। শব্দ কমান, বনভোজনের স্থান পরিষ্কার রাখুন। কীটনাশক বা আগুন ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ।
🍃 ৪. সিলেট
চা-বাগানে ঘেরা সবুজ পাহাড় আর নদীর পাশে ছড়িয়ে থাকা শিলা ও ঝর্ণার সৌন্দর্য চোখ জুড়ায়। বৃষ্টির মৌসুমে লালাখালের পানির নীলচে রঙ দর্শনীয়। পাহাড় ও বনাঞ্চল একত্রে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে।
অবস্থান:
জাফলং অবস্থিত সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পাথর এবং নদীঘেরা এলাকা, যা মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত।
যা দেখতে পাবেন:
- চা বাগান, লালাখাল, জাফলং
- হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.) মাজার
- রত্নাকর সোয়াম্প ফরেস্ট
কিভাবে যাবেন:
- ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা বিমান
কোথায় থাকবেন:
- রোজ ভিউ হোটেল
- হোটেল ফরচুন গার্ডেন
হোটেল ভাড়া:
বেসিক হোটেলে ৮০০–১৫০০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড হোটেলে ২০০০–৩০০০ টাকা, বিলাসবহুল হোটেলে ৪০০০–৮০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া হয়। শহরে রিসোর্টের রেট তুলনামূলকভাবে একটু বেশি।
সতর্কতা বার্তা:
ঝর্ণা ও পাথরের কাছে সাবধানে চলাফেরা করুন—পাথর পিচ্ছিল হতে পারে। ধর্মীয় স্থান ভ্রমণের সময় যথাযথ পোশাক পরিধান করুন ও শালীনতা বজায় রাখুন।
🏞️ ৫. বান্দরবান
পাহাড়ে ঘেরা নিঃশব্দ পরিবেশ, কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর আর সবুজে ঢাকা উপত্যকা বান্দরবানকে করে তুলেছে সেরা অ্যাডভেঞ্চার গন্তব্য। এখানে ঝর্ণা ও গুহার দেখা মেলে। বাতাসে পাহাড়ি সতেজতা অনুভব হয়।
অবস্থান:
বান্দরবান ভ্রমণস্থানগুলো যেমন নীলগিরি, বগালেক ও নাফাখুম জলপ্রপাত অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার সদর, রুমা ও থানচি উপজেলায়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।
যা দেখতে পাবেন:
- নীলগিরি, বগালেক, নাফাখুম
- চিম্বুক পাহাড় ও মারায়ং তং
কিভাবে যাবেন:
- চট্টগ্রাম থেকে বাসে বা প্রাইভেট গাড়িতে বান্দরবান
কোথায় থাকবেন:
- হোটেল হিলভিউ
- নীলগিরি রিসোর্ট
হোটেল ভাড়া:
- সাধারণ লজে ৮০০–১৫০০ টাকা,
- মাঝারি মানের হোটেলে ২০০০–৩৫০০ টাকা,
- নীলগিরি রিসোর্ট বা অভিজাত রিসোর্টে ৫০০০–১০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
সতর্কতা বার্তা:
পাহাড়ে হাইকিং এর সময় হেলমেট বা উপযুক্ত জুতা পরুন। নিরাপদ দূরত্বে থেকে ছবি তুলুন। স্থানীয়দের সংস্কৃতি ও নিয়মকানুনের প্রতি সম্মান দেখান।
🏛️ ৬. পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার
তিহাসিক এই স্থান প্রাকৃতিকভাবে শান্ত ও উন্মুক্ত। বিস্তীর্ণ মাঠ ও শুষ্ক আবহাওয়ার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাচীন স্থাপত্য এক আধ্যাত্মিক অনুভব দেয়। পাখির ডাক ও বাতাসে সৃষ্টির ইতিহাস যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
অবস্থান:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায়। এটি সোমপুর মহাবিহার নামেও পরিচিত এবং বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন।
যা দেখতে পাবেন:
- প্রাচীন সোমপুর মহাবিহার
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
কিভাবে যাবেন:
- বগুড়া বা নওগাঁ থেকে সড়কপথে
কোথায় থাকবেন:
- নওগাঁ শহরের হোটেল
- স্থানীয় গেস্টহাউজ
হোটেল ভাড়া:
- নওগাঁ বা বগুড়ার সাধারণ হোটেলে ৭০০–১৫০০ টাকা,
- মাঝারি মানের হোটেলে ২০০০–৩০০০ টাকা।
- সরকারি রেস্টহাউজ ভাড়া নির্ভর করে অনুমতির ওপর।
সতর্কতা বার্তা:
প্রাচীন স্থাপত্য স্পর্শ করা বা উঠা নিষেধ। ফটোগ্রাফি করার সময় ‘নো ফ্ল্যাশ’ মেনে চলুন। এলাকায় আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
🌾 ৭. শ্রীমঙ্গল
সবুজ চা-বাগান, ঘন বন আর সরু পাহাড়ি রাস্তা মিলে সৃষ্টি করেছে এক মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি। লাউয়াছড়া বনাঞ্চলে নানা জাতের পাখি ও প্রাণীর বিচরণ দেখা যায়। সকালে কুয়াশা ও সন্ধ্যায় ঝিরঝির বাতাস শান্তিময় করে তোলে।
অবস্থান:
শ্রীমঙ্গল অবস্থিত সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। এটি বাংলাদেশের চা রাজধানী হিসেবে পরিচিত এবং লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত এখানেই অবস্থিত।
যা দেখতে পাবেন:
- চা বাগান, সাতরঙা চা, লাউয়াছড়া
- মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
কিভাবে যাবেন:
- ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাস
কোথায় থাকবেন:
- গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্ট
- টি রিসোর্ট
হোটেল ভাড়া:
- বেসিক হোটেল ৮০০–১৫০০ টাকা,
- টি রিসোর্ট বা গ্র্যান্ড সুলতানে ৩৫০০–৭০০০ টাকা পর্যন্ত।
- রিসোর্টগুলোর প্যাকেজে নাস্তা ও ঘোরাফেরাও থাকতে পারে।
সতর্কতা বার্তা:
বনের ভিতর একা যাওয়া ঠিক নয়—গাইড নিয়ে যান। অজানা ফল বা গাছ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। চা বাগানের শ্রমিকদের সম্মান করুন, ছবি তুলতে অনুমতি নিন।
🕌 ৮. ষাট গম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাট
ঐতিহাসিক শহর হলেও মসজিদের আশপাশে সবুজ গাছপালা ও পুকুর প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। নিরিবিলি পরিবেশ আর মুসলিম ঐতিহ্য মিলে আধ্যাত্মিক শান্তির সৃষ্টি করে।
অবস্থান:
ষাট গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলায়। এটি বাংলাদেশের প্রাচীন ইসলামি স্থাপত্য নিদর্শন এবং খান জাহান আলীর স্মৃতি বিজড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
যা দেখতে পাবেন:
- ১৫শ শতাব্দীর ইসলামি স্থাপত্য
- খান জাহান আলী (রহ.) মাজার
কিভাবে যাবেন:
- খুলনা থেকে সড়কপথে
কোথায় থাকবেন:
- খুলনা শহরের হোটেল
- বাগেরহাটে স্থানীয় গেস্ট হাউজ
হোটেল ভাড়া:
- বাগেরহাটে স্থানীয় গেস্টহাউজে ৫০০–১০০০ টাকা,
- খুলনার হোটেলগুলোতে ১৫০০–৩৫০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়।
সতর্কতা বার্তা:
ধর্মীয় স্থানে ঢোকার আগে জুতা খুলে রাখুন। উচ্চস্বরে কথা না বলা ও স্থাপনার উপর না উঠা শালীন আচরণের অংশ। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন।
🛶 ৯. নিকলী হাওর
বর্ষায় জলমগ্ন ফসলি জমি এক বিশাল হ্রদে পরিণত হয়, যার মধ্যে দিয়ে নৌকায় ভ্রমণ করা যায়। দিগন্তজোড়া পানি, আকাশ আর নৌকার সারি অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যপট সৃষ্টি করে।
অবস্থান:
নিকলী হাওর অবস্থিত ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায়। বর্ষাকালে এটি বিশাল জলরাশিতে পরিণত হয় এবং নৌকা ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়।
যা দেখতে পাবেন:
- বর্ষাকালে বিশাল জলরাশি
- নৌকা ও ট্রলার ভ্রমণ
কিভাবে যাবেন:
- ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ, সেখান থেকে নিকলী
কোথায় থাকবেন:
- স্থানীয় আবাসিক হোটেল
- গেস্ট হাউজ
হোটেল ভাড়া:
- নিকলীতে কম মানের আবাসন ৫০০–১০০০ টাকা,
- কিশোরগঞ্জ শহরে ভালো মানের হোটেল ১৫০০–২৫০০ টাকা।
- স্থানীয় কিছু হোমস্টে ও গেস্টহাউজও আছে।
সতর্কতা বার্তা:
নৌকা বা ট্রলারে লাইফজ্যাকেট ব্যবহার করুন। শিশুদের একা নৌকায় উঠতে দেবেন না। ঝড় বা বজ্রপাতের সময় জলভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
🦁 ১০. বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, গাজীপুর
ঘন বনের মাঝে তৈরি এই পার্কে মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করা বন্যপ্রাণী দেখার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। চারপাশে গাছপালা ও হ্রদ মিলিয়ে তৈরি হয়েছে সুনির্মিত বন্য পরিবেশ।
অবস্থান:
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক অবস্থিত ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায়। এটি একটি মুক্ত পরিবেশে বন্যপ্রাণী দেখার জায়গা, যা পারিবারিক ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
যা দেখতে পাবেন:
- বন্য প্রাণী সরাসরি দেখতে পাবেন
- হাতি, সিংহ, জিরাফ, হরিণ
কিভাবে যাবেন:
- ঢাকা থেকে গাজীপুর
কোথায় থাকবেন:
- গাজীপুরে রিসোর্ট (নকশী পল্লী, সাদা পাথর)
- ঢাকায় ফিরে থাকতে পারেন
হোটেল ভাড়া:
- গাজীপুরে রিসোর্টে রাতপ্রতি ২০০০–৫০০০ টাকা,
- বিলাসবহুল রিসোর্টে ৬০০০–১০,০০০ টাকা।
- ঢাকা থেকে যাতায়াত করলে দিনশেষে ফিরে যেতেও পারেন।
সতর্কতা বার্তা:
বন্যপ্রাণীর কাছাকাছি যাওয়া, খাদ্য প্রদান বা শব্দ করা বিপজ্জনক। পার্কের নিয়ম-কানুন মেনে চলুন। জানালা খোলা বা গাড়ি থেকে নেমে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
ব্যক্তিগত মতামত
ছুটির দিনে ঘুরে আসুন বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান, যেখানে রয়েছে প্রকৃতি, ইতিহাস ও শান্তির অপূর্ব মিলন। কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিনে সমুদ্রের বিশালতা, সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর রহস্য, সিলেট ও বান্দরবানে পাহাড়-ঝর্ণার রূপ, শ্রীমঙ্গলে চা-বাগান, নিকলী হাওরে জলের রাজ্য, পাহাড়পুর ও ষাট গম্বুজ মসজিদে ইতিহাস, আর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণীর সরাসরি দেখা মিলবে। নিরাপদ ও সচেতন ভ্রমণের মাধ্যমে ঈদ হোক আনন্দময় ও স্মরণীয়।
🌟 শুভ কামনা 🌟
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘুরে দেখতে আগ্রহী সকল ভ্রমণপিপাসুকে আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান – প্রতিবেদনটি আপনার যাত্রাকে আরও উপভোগ্য করে তুলুক। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ। শুভ ভ্রমণ!
বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান- FAQ-
১. কিভাবে বাংলাদেশের ভ্রমণ স্থানে সস্তায় ঘোরা যায়?
সস্তায় ভ্রমণের জন্য ট্রেন বা সাধারণ বাস ব্যবহার করুন এবং হোস্টেল বা গেস্টহাউজে থাকার ব্যবস্থা করুন। আগে থেকে বুকিং করলে খরচ কম হয়।
২. বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থান কোনগুলো?
কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, সুন্দরবন, সিলেট, বান্দরবান, শ্রীমঙ্গল, পাহাড়পুর, ষাট গম্বুজ মসজিদ, নিকলী হাওর ও বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক।
৩. ঈদে ভ্রমণ করার সময় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
বাড়তি ভিড় থেকে নিরাপদ থাকতে মাস্ক ব্যবহার, মূল্য যাচাই করে কেনাকাটা, পরিচিত ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবহার ও প্রাকৃতিক স্থানগুলো পরিষ্কার রাখা জরুরি।
৪. সেন্ট মার্টিনে কীভাবে যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে কক্সবাজার, সেখান থেকে টেকনাফ এবং এরপর ট্রলার বা জাহাজে সেন্ট মার্টিনে যেতে হয়।
৫. কক্সবাজারে ভালো মানের হোটেল বা রিসোর্ট কোথায় পাওয়া যায়?
সায়মন রিসোর্ট, সি গাল, দ্যা কক্স টুডে — এসব হোটেল কক্সবাজারের জনপ্রিয় এবং মানসম্মত।
৬. বান্দরবানে ভ্রমণ করার জন্য সেরা সময় কোনটি?
শীতকাল (নভেম্বর–ফেব্রুয়ারি) ভ্রমণের জন্য আদর্শ, কারণ আবহাওয়া তখন পরিষ্কার ও ঠান্ডা থাকে।
৭. পরিবার নিয়ে কোথায় নিরাপদে ভ্রমণ করা যাবে?
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, কক্সবাজার, সিলেট ও শ্রীমঙ্গল পরিবার নিয়ে ভ্রমণের জন্য নিরাপদ ও উপযুক্ত।
Leave a Reply