সুন্দরবন ভ্রমণ এর অন্যতম কারন সুন্দরবন হলো পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত। এটি ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাভুক্ত এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য বিখ্যাত। সুন্দরবন ১২০টিরও বেশি প্রজাতির মাছ, ২৬০টিরও বেশি প্রজাতির পাখি এবং অসংখ্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। এই বন বাংলাদেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুন্দরবন ভ্রমণে যা দেখবেন (10 lines about Sundarban):
- বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন:
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে স্বীকৃত। এটি প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। - জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ:
সুন্দরবনে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ৩০০ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায়। - রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল:
সুন্দরবন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রাকৃতিক বাসস্থান। এটি এই বনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। - প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা:
সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করে। এটি ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। - নদ-নালা ও জলপথের জালিকা:
সুন্দরবনে অসংখ্য নদী, খাল এবং জলপথের বিস্তৃত জালিকা রয়েছে। এর মধ্যে পশুর, শিবসা, মধুমতী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। - মূল গাছপালা:
সুন্দরবনে সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া, বাইনসহ ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের প্রধান প্রজাতিগুলো পাওয়া যায়। - মিঠা ও লোনা পানির সংমিশ্রণ:
সুন্দরবনে মিঠা এবং লোনা পানির সংমিশ্রণ রয়েছে, যা এই অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎকে অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। - প্রাকৃতিক সম্পদ:
সুন্দরবন মধু, গোলপাতা, মাছ এবং জ্বালানি কাঠের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। - পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় স্থান:
সুন্দরবনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান যেমন কটকা, করমজল, দুবলা চর পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। - বিশ্ব ঐতিহ্য:
১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সুন্দরবনের ইতিহাস (History of the Sundarbans ):
সুন্দরবন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। এটি বাংলাদেশের একটি গৌরবময় প্রাকৃতিক ঐতিহ্য। ইতিহাসের প্রাচীন যুগ থেকে এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সুন্দরবনের অবস্থান (Location of the Sundarbans ):
সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে বিস্তৃত। এর কিছু অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও রয়েছে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর মোহনায় সুন্দরবনের অবস্থান।
সুন্দরবনের আয়তন (Area of Sundarbans ):
সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪,২৬০ বর্গকিলোমিটার অবস্থিত। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে জলাভূমি, নদী এবং খাল বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে স্বীকৃত।
সুন্দরবন কেন বিখ্যাত ? (Why Sundarban famous?)
সুন্দরবন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য বিখ্যাত। এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করে। সুন্দরবনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা, যেমন সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া। এছাড়াও এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, লোনা পানির কুমির, গাঙ্গেয় ডলফিন এবং প্রায় ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে।
সুন্দরবনের মূল্যবান সম্পদ (The valuable resources of the Sundarbans)
সুন্দরবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হল সুন্দরী গাছ এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এছাড়া মধু, মাছ, গোলপাতা এবং জ্বালানী কাঠও এখানকার গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
দর্শনীয় স্থান সমূহ (Places to visit in Sundarban:
সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কটকা, করমজল, দুবলা চর এবং হিরণ পয়েন্ট উল্লেখযোগ্য। এই স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
সুন্দরবনে দ্বীপ সমূহ (Sundarbans Island):
সুন্দরবনে অসংখ্য ছোট বড় দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দ্বীপ হল ধানগড়া দ্বীপ, শীলের চর দ্বীপ এবং পাখির দ্বীপ।
সুন্দরবনের সেরা স্থান (Best place in Sundarbans) :
সুন্দরবনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে কটকা এবং করমজল অন্যতম। কটকা তার বন্যপ্রাণী এবং করমজল তার কুমির প্রজনন কেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত।
সুন্দরবন যাওয়ার মাধ্যম (Dhaka to Sundarban tour):
সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য খুলনা, মোংলা বা সাতক্ষীরার বিভিন্ন ঘাট থেকে নৌযান ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেন বা বাসে খুলনা পৌঁছে সেখান থেকে লঞ্চে সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ সম্ভব।
সুন্দরবন থাকার ব্যবস্থা (Best resort in Sundarban) :
সুন্দরবনের আশেপাশে পর্যটকদের জন্য বেশ কিছু থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনা, মোংলা এবং সাতক্ষীরায় বিভিন্ন মানের হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়া বন বিভাগের অনুমোদিত ক্যাম্পিং ব্যবস্থাও পাওয়া যায়।
হোটেল বুকিং (Hotel in Sundarban):
সুন্দরবন ভ্রমণে মানসম্মত হোটেল এর জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আপনাকে আপনার বাজেট অনুযায়ী নিরাপদ এবং উন্নত মানের হোটেলে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব। তবে অবশ্যই আপনার বাজেট এবং চাহিদা জানিয়ে ভ্রমণের আগেই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।সুন্দরবনে হোটেল বুকিং দিতে আমাদের admin@travelwayinfo.com মেইলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হল।
সুন্দরবন ভ্রমণ টিপস:
- শীপে ওঠার আগে আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে উঠুন।
- খাবার এবং পানি সাথে রাখুন
- প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র সাথে রাখুন।
- ভ্রমণ প্যাকেজ বুকিং এর আগে এজেন্সি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
- সুন্দরবন ঘুরতে আসলে আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে দুই থেকে তিন দিনের প্যাকেজে ভ্রমণ করুন।
- আপনার ভ্রমণের সঠিক সময় এবং যে শীপে ভ্রমণ করবেন তা আগেই নিশ্চিত করবেন।
- আপনার ভ্রমণ খরচ কমাতে চাইলে অবশ্যই ছুটির দিনগুলো এড়িয়ে চলুন।
- ভ্রমণের সময় অবশ্যই সাথে জাতীয় পরিচয় পত্র রাখবেন।
- আপনার ভ্রমণের সময় ভ্রমণ ট্যুর গাইডের কথা মেনে চলুন।
- গহীন বনে ঢোকার সময় একসাথে থাকবেন
- শীতকালে ভ্রমনের সময় অবশ্যই ভালো মানের শীতের কাপড় সাথে রাখবেন।
প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টিকর্ম সুন্দরবন। এর রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য আমাদের সকলের সচেতন হওয়া উচিত
Leave a Reply