ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার ঝালকাঠি জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। বাংলাদেশের একমাত্র ভাসমান পেয়ারা বাজার হিসেবে ভিমরুলি পেয়ারা বাজার পরিচিত, যা বরিশাল বিভাগের সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত। বরিশাল, পিরোজপুর এবং ঝালকাঠি জেলার বিস্তৃত বিল অঞ্চলে স্থানীয় কৃষকরা শত শত বছর ধরে পেয়ারা চাষ করে আসছেন।
ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজারের পরিচিতি -Bhimruli floating guva market:
ভাসমান পেয়ারা বাজার ঝালকাঠি জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার অন্তর্গত। এটি এক অনন্য পর্যটন কেন্দ্র, যেখানে মূলত নৌকায় বসেই ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রি করে থাকেন। ভাসমান বাজারের প্রধান আকর্ষণ হল ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে ব্যবসায়ীদের পেয়ারা বেচাকেনা করা। বর্ষা মৌসুমে ভাসমান বাজার তার আসল রূপ ধারণ করে, যখন খাল এবং বিল পানিতে পরিপূর্ণ থাকে।
ভাসমান পেয়ারা বাজারের অবস্থান -Bhimruli guva market Location:
ভিমরুলি বাজার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভিমরুলি গ্রামে অবস্থিত। স্বরূপকাঠি উপজেলার কাছাকাছি এই বাজারে স্থানীয় কৃষকরা নৌকা যুগে তাদের উৎপাদিত সকল পেয়ারা নিয়ে আসেন এবং বিক্রি করেন।ভাসমান পেয়ারা বাজার ডিম মূলত সন্ধ্যা নদীর শাখা- খালের উপর বিস্তৃত। এই বাজারের অবস্থান পর্যটকদের জন্য সহজে প্রবেশ যোগ্য এবং দর্শনীয়।
ভাসমান পেয়ারা বাজার কীভাবে যাবেন – Dhaka to vimruli floating market:
ঢাকা থেকে বাসে বা লঞ্চে বরিশাল পৌঁছে সেখান থেকে সড়ক পথে ঝালকাঠি যেতে হবে ।ঝালকাঠি থেকে অটো রিক্সা বাস স্থানীয় যানবাহনে করে সহজেই ভিমরুলি বাজারে পৌঁছানো যায়। অথবা আপনি চাইলে লঞ্চে সরাসরি ঝালকাঠি পৌঁছাতে পারবেন।
ভিমরুলি বাজারে যা দেখবেন – You will see at vimaruli bazaar:
১. ভাসমান পেয়ারা বাজার: ছোট ছোট নৌকায় করে কৃষকেরা তাজা পেয়ারা, আমড়া, নারকেল ও অন্যান্য স্থানীয় ফল বিক্রি করেন।
২. নৌকা ভ্রমণ: বাজারের চারপাশের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরতে পারেন।
৩. গ্রামীণ জীবনযাত্রা: স্থানীয় কৃষকদের জীবনযাত্রা ও ঐতিহ্যবাহী পেয়ারা চাষ পদ্ধতি দেখার সুযোগ পাবেন।
৪. স্থানীয় খাবার: বাজারের আশপাশে স্থানীয় খাবার, বিশেষ করে পেয়ারা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার উপভোগ করতে পারবেন।
৫. ছবি তোলার সুযোগ: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ বাজার ফটোগ্রাফারদের জন্য অসাধারণ এক স্থান।
ভাসমান পেয়ারা বাজারে যা পাবেন – Guava market Barisal:
১. তাজা পেয়ারা: এই বাজারের প্রধান আকর্ষণ হল টাটকা ও সুস্বাদু পেয়ারা, যা স্থানীয় কৃষকরা সরাসরি বিক্রি করে থাকেন
২. আমড়া ও অন্যান্য ফল: পেয়ারার পাশাপাশি আমড়া, নারকেল, কলা ও অন্যান্য মৌসুমি ফল পাওয়া যায়।
৩. বিভিন্ন ধরনের নৌকা: এখানে ছোট বড় নানা আকৃতির নৌকা পাওয়া যায়, যা পর্যটকদের নৌকা ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
৪. স্থানীয় হস্তশিল্প ও পণ্য: কিছু দোকানে স্থানীয়ভাবে তৈরি হাতের কাজের সামগ্রী ও ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়।
ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজারের বিশেষত্ব- Guava Garden In Bangladesh-
১. পানির উপর বেচাকেনা: কৃষকরা তাদের তাজা পেয়ারা, আমড়া, নারকেল এবং অন্যান্য স্থানীয় ফল নিয়ে নৌকায় করে আসেন এবং ক্রেতাদের কাছে সরাসরি বিক্রি করেন।
২. পর্যটন আকর্ষণ: স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি একটি চমৎকার একটি ভ্রমণ স্থান। অনেকেই এখানে এসে নৌকা ভ্রমণ করেন এবং গ্রামীণ সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
৩. ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদ: এ অঞ্চলের পেয়ারা উৎপাদন দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উন্নতমানের এবং সুস্বাদু।
সতর্কতা ও পরামর্শ:
- বাজারটি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশি সরগরম থাকে, তাই ভোরবেলা যাওয়া ভালো।
- স্থানীয় গাইডের সহায়তা নিলে বাজার ঘুরে দেখা সহজ হয়।
- নৌকা ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা বজায় রাখা উচিত।
মন্তব্য:
ভাসমান পেয়ারা বাজার শুধু একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। যারা প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য এই বাজার একটি আদর্শ গন্তব্য।
ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন 🧳✈️
Travel Way Info-তে আমরা আপনাকে সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিতে সর্বদা প্রস্তুত! 🌍 আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভ্রমণ সম্পর্কিত তথ্য, টিপস, গাইড এবং নতুন গন্তব্য সম্পর্কে আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য সঠিক গাইড পেতে আমাদের সাথেই থাকুন!
ভালো লাগলে শেয়ার করুন, কমেন্ট করুন এবং আমাদের পরবর্তী পোস্টের জন্য চোখ রাখুন! 🚀✨
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
১. ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার কোথায় অবস্থিত?
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভিমরুলি গ্রামে অবস্থিত এই বাজার, স্বরূপকাঠি এলাকার নিকটে অবস্থান করছে।
২. ভাসমান পেয়ারা বাজার কেন বিশেষ?
বাংলাদেশের একমাত্র ভাসমান পেয়ারা বাজার হিসেবে এটি পরিচিত, যেখানে কৃষকরা ছোট ছোট নৌকায় করে সরাসরি পেয়ারা ও অন্যান্য ফল বিক্রি করেন।
৩. এখানে কী কী পেয়ারা পাওয়া যায়?
স্থানীয়ভাবে চাষকৃত বিভিন্ন জাতের তাজা, মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত পেয়ারা পাওয়া যায়।
৪. ভাসমান বাজারে অন্যান্য কী পণ্য পাওয়া যায়?
পেয়ারার পাশাপাশি আমড়া, নারকেল, কলা, স্থানীয় হস্তশিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারও এখানে পাওয়া যায়।
৫. ভিমরুলিতে কীভাবে যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে বাস বা লঞ্চে বরিশাল পৌঁছে সড়ক পথে ঝালকাঠি যেতে হবে। ঝালকাঠি থেকে অটো কিংবা স্থানীয় পরিবহনে ভিমরুলি বাজারে সহজেই পৌঁছানো যায়।
৬. বাজার ঘুরে দেখার সেরা সময় কখন?
বর্ষাকালে বাজারটি তার পূর্ণ বৈচিত্র্যে ঝলমল করে। ভোর থেকে দুপুর সময়টা ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।
৭. ভাসমান বাজারে পর্যটকরা কী কী উপভোগ করতে পারেন?
-
নৌকায় করে পেয়ারা ও অন্যান্য ফল কেনাবেচা
-
নৌকা ভ্রমণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ
-
স্থানীয় কৃষকদের জীবনযাত্রা ও পেয়ারা চাষ প্রক্রিয়া দেখা
-
ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় খাবার খাওয়া
-
ফটোগ্রাফির জন্য অসাধারণ পরিবেশ
৮. ভাসমান বাজার ঘুরতে গাইড প্রয়োজন কি?
গাইড থাকলে স্থানীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিস্তারিত জানা যায়, তবে গাইড ছাড়া ও বাজার ঘুরে দেখা যায়।
৯. নৌকা ভ্রমণের সময় কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন?
নৌকায় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করবেন এবং সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করবেন।
১০. ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজারের গুরুত্ব কী?
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ভাসমান বাজার হিসেবে এটি গ্রামীণ সংস্কৃতি ও কৃষিজীবনের অসাধারণ এক অংশ। পর্যটকদের জন্য এটি প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক মিলনের অনন্য গন্তব্য।
ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজারে ভ্রমণ আপনার জন্য হবে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা।
Travel Way Info সবসময় আপনার পাশে, সেরা ভ্রমণ গাইড ও তথ্য দিয়ে।
➡️ আরও ভ্রমণ গাইড পড়ুন: বরিশাল বিভাগের ইতিহাস ও বরিশাল বিভাগের দর্শনীয় স্থান – Barishal City
Leave a Reply